কোম্পানি কি?
কোম্পানি বা কর্পোরেশন হলো একটি অভিনব ও সর্বাধুনিক ব্যবসায় সংগঠন, যা সর্বাপেক্ষা আইনসৃষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত।
বাংলাদেশে বলবৎ ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ২(১-ট) ধারায় প্রাইভেট কোম্পানি সংগঠনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলতে এমন কোম্পানিকে বোঝায় যা এর নিয়মাবলী অনুসারে এর সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ৫০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
এটি সদস্যদের শেয়ার হস্তান্তরের অধিকারের সীমাবদ্ধতা আরোপ করে এবং শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয়ের জন্য জনসাধারণের প্রতি আহবান নিষিদ্ধ করে।
কোম্পানির শ্রেণীবিভাগঃ
(১) সনদপ্রাপ্ত কোম্পানি
(২) সংবিধিবদ্ধ কোম্পানি
(৩) নিবন্ধিত কোম্পানি
(৪) সসীম দায় কোম্পানি
(৫) প্রতিশ্রুত মূল্য দ্বারা সসীম দায় কোম্পানি
(৬) শেয়ার মূল্য দ্বারা সসীম দায় কোম্পানি
(৭) প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি
(৮) পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি
(৯) সরকারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি
(১০) বেসরকারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি
(১১) হোল্ডিং কোম্পানি
(১২) সাবসিডারি কোম্পানি
(১৩) অসীম দায় কোম্পানি
(১৪) অনিবন্ধিত কোম্পানি
(১৫) অব্যবসায়ী কোম্পানি
লিমিটেড কোম্পানিঃ
লিমিটেড কোম্পানি বলতে যা বুঝায় তাহলো শেয়ার দ্বারা নিবন্ধতি সীমিত দায়বদ্ধ একটি প্রাইভেট বা পাবলিক কোম্পানি কোম্পানি যার নামের শেষে লিমিটেড শব্দটি লেখা হয়। যেমন: বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানি, ডাচবাংলা (প্রা.) লিমিটেড কোম্পানি ইত্যাদি।
লিমিটেড কোম্পানির নামঃ
\
বাংলাদেশের কিছু উল্লেখযোগ্য লিমিটেড কোম্পানির তালিকা সমূহঃ-
- এয়ারটেল (বাংলাদেশ), টেলিটক, গ্রামীণফোন,রবি,বাংলালিংক,সিটিসেল (বর্তমান বন্ধ রয়েছে), মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ,বসুন্ধরা গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, ইস্পাহানি গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাভানা গ্ৰুপ, স্কয়ার গ্রুপ, ট্রান্সকম গ্রুপ, বেঙ্গল গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, নাসির গ্রুপ, কর্ণফুলী গ্রুপ, স্কয়ার ইলেকট্রনিক্স, ট্রান্সকম ডিজিটাল, রহিম আফরোজ, ওয়ালটন, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড, দৈনিক প্রথম আলো, এনটিভি (বাংলাদেশ), বাংলাভিশন, এটিএন বাংলা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন, আরটিভি (বাংলাদেশ), চ্যানেল আই (ইমপ্রেস টেলেফিল্ম লিমিটেড / চ্যানেল), দৈনিক ভোরের কাগজ, দেশ টিভি, দৈনিক ইত্তেফাক, এসকে ফিল্মস, জাজ মাল্টিমিডিয়া, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম, প্যানারোমা মুভিজ ইত্যাদি।
লিমিটেড কোম্পানি করার নিয়মঃ
লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়/ নিয়ম সমূহঃ-
অনুমোদিত মূলধন (Authorized Capital)
কোন নিবন্ধিত কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন হল ঐ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ পরিমাণ মূলধনের সীমা যা প্রতিটি অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। এই পরিমাণের সংখ্যা স্পষ্টভাবে সংঘ স্মারক (Memorandum of Association) এবং সংঘবিধিসমুহে (Articles of Association) অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে এবং এসকল দলিলপত্র নিবন্ধনের পূর্বেই যথাযথভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে।
পরিশোধিত মূলধন (Paid-Up-Capital)
কোম্পানি নিবন্ধনের সময় কোন কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বা মূলধন সর্বনিম্ন ১ টাকা হতে হবে।নিবন্ধনের পর অনুমোদিত সীমার মধ্যে যে কোন পরিমাণ অর্থ কোম্পানির মূলধন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
পরিচালকবৃন্দ
লিমিটেড কোম্পানির পরিচালকের সংখ্যা কমপক্ষে দুজন (আবাসিক কিংবা অনাবাসিক) হতে হবে এবং পরিচালকবৃন্দের পদবী এবং শেয়ারের সংখ্যা স্পষ্টভাবে কোম্পানির সংঘবিধিসমুহে (Articles of Association) উল্লেখ থাকতে হবে।লক্ষ্য রাখতে হবে কোন ব্যক্তি ১৮ বছরের কম কিংবা দেউলিয়া কিংবা কোনোরূপ আর্থিক অপরাধমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হলে পরিচালকগণ অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
অংশীদারগণ
একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির অংশীদারের সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ জন হতে সর্বোচ্চ ৫০ জন পর্যন্ত হতে পারে। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে এর সংখ্যা হবে সর্বনিম্ন ৭ জন থেকে অসীম।
নিবন্ধনের ঠিকানা
কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য অবশ্যই একটি প্রাসঙ্গিক ঠিকানা ( বাণিজ্যিক কিংবা আবাসিক) প্রদান করতে হবে যা কোম্পানির নিবন্ধিত ঠিকানা বলে বিবেচিত হবে।
লিমিটেড কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াঃ
লিমিটেড কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া/ধাপ সমূহ নিচে দেওয়া হলোঃ-
প্রথম ধাপ: নামের ছাড়পত্র
কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হল কোম্পানির নামের জন্য যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (Registrar of Joint Stock Companies and Firms) হতে একটি ছাড়পত্র সংগ্রহ করা।
ছাড়পত্র সংগ্রহের জন্য আপনাকে যা যা করতে হবে তা নিম্নরুপঃ-
(১) প্রথমে আপনি যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
(২) এবার একটি ইউজার আইডি তৈরি করুন
(৩) এবার একটি Name clearance এর আবেদন করুন।
এই Name clearance এর আবেদনের জন্য আপনাকে ওয়েবসাইট থেকে একটি পেমেন্ট স্লিপ প্রদান করা হবে সেটি দিয়ে আপনি নির্ধারিত ব্যাংকে কোম্পানির নামের ছাড়পত্রের জন্য সরকারী ফি ভ্যাট সহ ৳ ১১৫০/- (এগার শত পঞ্চাশ টাকা) জমা প্রদান করতে হবে।
সরকারী ফি জমা প্রদানের ২-৩ ঘন্টা পর অথবা ক্ষেত্র বিশেষে ১ দিন পর আপনার ইউজার আইডি দিয়ে পুনরায় ওয়েবসাইটে লগ-ইন করুন। এবার দেখুন আপনার কোম্পানির নামের ছাড়পত্রটি আপনি পেয়ে গেছেন! সেটি ডাউনলোড করে নিজের কাছে সংগ্রহ করে রাখুন এবং পরবর্তী প্রক্রিয়ার কার্যক্রম /ধাপ সমূহ সম্পন্ন করুন।
মনে রাখবেন এই ছাড়পত্রের মেয়াদ থাকবে কোম্পানির Name clearance অনুমোদিত হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিন। ক্ষেত্র বিশেষে এই ছাড়পত্রের মেয়াদ ৬০ দিন হতে সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত বর্ধিত করা যেতে পারে ।
দ্বিতীয় ধাপ: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতকরণঃ
কোম্পানি নিবন্ধত করতে হলে যে সকল কাগজপত্রাদি প্রয়োজন হবে। কোম্পানি আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী, প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে;
1) নামের ছাড়পত্র
2) মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন ও আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর মূলকপি (অতিরিক্ত দুই কপি সহ)
3) ফরম পূরণঃ কোম্পানি নিবন্ধনের ঘোষণা
4) ফরম পূরণ- নিবন্ধিত অফিসের অবস্থান বা তার পরিবর্তনের নোটিশ
5) ফরম পূরণ- পরিচালকের সম্মতিপত্র
6) ফরম পূরণ- পরিচালক হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের তালিকা
7) ফরম পূরণ- পরিচালক, ব্যবস্থাপক এবং ব্যবস্থাপনা এজেন্টদের তথ্য এবং তাতে কোন পরিবর্তন
পাবলিক কোম্পানীর ক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে;
১) নামের ছাড়পত্র
২) মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন ও আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর মূলকপি (অতিরিক্ত দুই কপি সহ)
৩) ফরম পূরণঃ কোম্পানি নিবন্ধনের ঘোষণা ।
৪) ফরম পূরণ- নিবন্ধিত অফিসের অবস্থান বা তার পরিবর্তনের নোটিশ ।
৫) ফরম পূরণ- পরিচালকের সম্মতিপত্র।
৬) ফরম পূরণ- পরিচালক হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের তালিকা ।
৭) ফরম পূরণ- পরিচালক, ব্যবস্থাপক এবং ব্যবস্থাপনা এজেন্টদের তথ্য এবং তাতে কোন পরিবর্তন ।
৮ ) ফরম পূরণ-বিবরণীর পরিবর্তে কোম্পানি ফাইলিং স্ট্যাট্মেন্ট এর ক্ষেত্রে ব্যবসা শুরুর পূর্বে ঘোষণাপত্র ।
৯) ফরম পূরণ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)- প্রস্তাবিত কোম্পানির যোগ্যতা শেয়ার গ্রহণের চুক্তিপত্র ।
বিদেশি কোম্পানীর ক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে ;
১) ফরম পূরণ- সনদ বা সংঘবিধি বা মেমোরেন্ডাম এবং কোম্পানির আর্টিকেল অথবা কোম্পানির সংবিধান গঠনকারী বা সংজ্ঞায়নকারী কোনো দলিল,
২) ফরম পূরণ- কোম্পানির নিবন্ধিত বা প্রধান অফিসের ঠিকানা,
৩) ফরম পূরণ – পরিচালক এবং ব্যবস্থাপকদের (ম্যানাজার) এর তালিকা
৪) ফরম পূরণ- সেবা গ্রহণ করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির রিটার্ন,
৫) ফরম পূরণ- বাংলাদেশে কার্যক্রমের প্রধান স্থানের অবস্থান বা তাতে কোন পরিবর্তন,
৬) কোন তফসিলি ব্যাংক থেকে মুদ্রা নগদীকরণ (ইনক্যাশমেন্ট) সার্টিফিকেট,
৭) বাংলাদেশের বিনিয়োগ বোর্ডের কাছ থেকে অনুমতিপত্র।
তৃতীয় ধাপ: নতুন ব্যাংক একাউন্ট খোলা
প্রস্তাবিত কোম্পানীর নামে বাংলাদেশে তালিকাভূক্ত যেকোনো একটি ব্যাংকের অধীনে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে। শেয়ারহোল্ডার হিসেবে যদি কোনো বিদেশি থেকে থাকেন তবে তার অধীনে থাকা শেয়ারের সমপরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক একটি মুদ্রা নগদীকরণ সার্টিফিকেট প্রদান করবে যা রেজিস্ট্রেশনের সময় আরজেএসসি কর্তৃক প্রয়োজন হবে।
চতুর্থ ধাপ: সফলভাবে কাগজপত্র জমাদান
নিবন্ধন প্রক্রিয়ার এই পর্যায়ে আরজেএসসি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি দাখিল করতে হবে। কোম্পানীর নামের ছাড়পত্র পাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি পেতে যা যা দরকারঃ
(ক) মেমোরান্ডাম এবং আর্টিকল অফ এসোসিয়েশন সহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি আর আরজেএসসি’র ওয়েবসাইটে বর্ণিত নির্ধারিত ফরম্যাট মেনে প্রস্তুত করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
(খ) নামের ছাড়পত্র পাওয়ার পর পরবর্তি ৩০ দিনের মধ্যে অনলাইনে (আরজেএসসি ওয়েবসাইটে) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন।
(গ) ব্যাংকে নির্ধারিত নিবন্ধন ফী পরিশোধ করুন (ওয়েবসাইট হতে এ ক্ষেত্রে একটি জমা রশিদ প্রদান করা হবে)
কোম্পনি নিবন্ধনের জন্য যেভাবে আবেদন করবেন;
এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন Office of the Registrar of Joint Stock Companies and Firms
Select the “Type” of Company you will be registering
যে কোম্পানীর নিবন্ধন করা হবে তার ‘Type” নির্বাচন করুন । নামের ছাড়পত্র জমা নম্বর (Name Clearance Submission No.) এবং নামের ছাড়পত্র চিঠির নম্বর (Name Clearance Letter No.) নির্ধারিত জায়গায় লিখুন “Continue” অংশে ক্লিক করুন। এরপর যে ফর্ম টি আসবে তা পূরণ করুন। নির্ধারিত ফরম্যাটে মেমোরান্ডাম এবং আর্টিকল অফ এসোসিয়েশন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন। Confirm all the details submitted প্রদানকৃত সকল তথ্য নিশ্চিত (Confirm) করুন এবার “Submit” অংশে ক্লিক করুন।
ওয়েবসাইট হতে জমা রশিদ পাওয়ার পর আপনার কাজ হচ্ছে সেই অনুযায়ী ফী ব্যাংকে পরিশোধ করা।
ফী পরিশোধ সম্পন্ন হলে আপনার কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে।
It doesn’t end there though, next you will need to follow up with the RJSC as once satisfied with the application, they will be the ones sending you digitally signed copies of your
পরবর্তিতে আপনাকে নিয়মিত আরজেএসসিতে খোঁজ খবর রাখতে হবে যেহেতু নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট হলে তারাই আপনাকে নিম্নে বর্ণিত নথির ডিজিটালি স্বাক্ষরিত অনুলিপি প্রদান করবে।
সার্টিফিকেট অফ ইনকর্পোরেশন, মেমোরান্ডাম এবং আর্টিকল অফ এসোসিয়েশন
ফর্ম XII (১২), যে ইমেইল প্রদান করা হয়েছে তার মাধ্যমে যদি নিবন্ধন প্রক্রিয়া একটু ধীরগতির হয় সেই ক্ষেত্রে আরজেএসসির কর্মকর্তারা আপনার কাছে আরো অতিরিক্ত কিছু তথ্য চাইতে পারেন যা আপনাকে আরজেএসসিতে গিয়ে প্রদান করে আসতে হবে।
লিমিটেড কোম্পানির ট্রেড লাইসেন্স ফি
এই ধাপটি নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কোনো অবিচ্ছেদ্য অংশ নয় তবে এর মধ্যে সেসব অন্তর্ভূক্ত আছে কোম্পানী নিবন্ধন শেষ হবার পর সেসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা প্রয়োজন হতে পারে।
পঞ্চম ধাপ: নিবন্ধন পরবর্তি প্রক্রিয়া
This step is not exactly a fundamental part of the registration process, but it includes a number of formalities that should be undertaken once you have completed your company registration.
As a Limited Company (private and Public), you will need to obtain;লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে (প্রাইভেট এবং পাবলিক) যা যা নিতে হবে,
আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন হতে ট্রেড লাইসেন্স
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর ওয়েবসাইটে আবেদনের মাধ্যমে প্রাপ্ত কর শণাক্তকরণ নম্বর (TIN)
ওনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত মূসক নিবন্ধন সার্টিফিকেট
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স অথরিটি হতে প্রাপ্ত ফায়ার সার্টিফিকেট
পরিবেশ অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত পরিবেশ ছাড়পত্রের সার্টিফিকেট (যদি কোনো শিল্প প্রকল্প জড়িত থাকে)
লিমিটেড কোম্পানি করার খরচঃ
লিমিটেড কোম্পানীর নিবন্ধন ফি নির্ভর করে- অথোরাইজড কেপিটালের উপর।অথোরাইজড কেপিটাল হয় সাধারনত ১০ লক্ষ , ২০ লক্ষ, ৩০ লক্ষ, ৪০ লক্ষ বা এর বেশি হতে পারে। লিমিটেড কোম্পানি করার খরচ এই অথোরাইজড কেপিটালের উপর নির্ভর করে।
আপনি কি কোন সার্ভিসটি নিতে চান? জানাবেন । বিস্তারিত জানতে আমাদের এই নাম্বারে কল করে জেনে নিতে পারেনঃ- মোবাইল:- 01842459590
লিমিটেড কোম্পানির পদসমূহ পদসমূহঃ-
একটি লিমিটেড কোম্পানির ২ টি পদ বাধ্যতামূলক
১. চেয়ারম্যান (Chairman)
২. ব্যবস্থাপনা পরিচালক (Managing Director (MD)
সদস্য সংখ্যা বেশি থাকলে আরো অনেক পদ রাখা যেতে পারে।
3. Vice Chairman (সহ সভাপতি)
4. Chief Executive Officer (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা)
5. Deputy Managing Director (উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক)
6. Executive Director (নির্বাহী পরিচালক)
7. Finance Director (অর্থ পরিচালক)
8. Marketing Director (বিপণন পরিচালক)
এছাড়াও আরো অনেক পদ রয়েছে ।
লিমিটেড কোম্পানির সুবিধা অসুবিধাঃ
লিমিটেড কোম্পানির / কোম্পানি সংগঠনের সুবিধাসমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ
(১) সীমিত দায়: কোম্পানি ব্যবসায়ের শেয়ার মালিকদের দায় শেয়ার মূল্য দ্বারা সীমাবদ্ধ। এ কারণে জনগণ বিনা দ্বিধায় এ সংগঠনে বিনিয়োগ করে।
(২) অধিক পুঁজি: এ জাতীয় সংগঠন জনগণের নিকট শেয়ার ও ডিবেঞ্চার বিক্রয় করে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুঁজি সংগ্রহ করতে পারে যা অন্যান্য সংগঠনের পক্ষে সম্ভব নয়।
(৩) চিরন্তন অস্তিত্ব: আইন সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা কোম্পনিকে চিরন্তন অস্তিত্ব দান করেছে। তাই কোন সদস্যের মৃত্যু বা দেউলিয়াত্বের কারণে এর বিলুপ্তি ঘটে না।
(৪)স্বাধীন সত্তা: কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার কারণে এ সংগঠন নিজস্ব নাম ও সিলমোহর ব্যবহার করে তৃতীয় পক্ষের সাথে চুক্তি বা লেনদেন করতে পারে।
(৫) শেয়ার হস্তান্তর যোগ্যতা: পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার যে কেউ যে কোন সময় ক্রয় করতে পারে এবং শেয়ার হোল্ডার ইচ্ছা করলে যে কোন সময় শেয়ার অন্যের নিকট হস্তান্তর করতে পারে।
(৬) বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধা: অধিক পুঁজি নিয়ে গঠিত হয় বলে এ সংগঠন বৃহদাকার ব্যবসায়ের সুবিধা; যেমন-এক সাথে অধিক পরিমাণ পণ্য ক্রয় ও বিক্রয়, কম খরচে অধিক পরিমাণ পণ্য উৎপাদন, দক্ষ কর্মচারি নিয়োগ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে
মিতব্যায়িতা অর্জন ইত্যাদি সুবিধা ভোগ করে।
(৭) শেয়ারের প্রকারভেদ: কোম্পানি সংগঠনের শেয়ার বিভিন্ন ধরনের হওয়ায় জনগণ তাদের পছন্দ মত শেয়ার ক্রয় করতে পারে।
(৮) দক্ষ পরিচালনা: এ সংগঠনের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার উপর সুদক্ষ পরিচালনা বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকে। তাছাড়াস আর্থিক সংগতি থাকার প্রয়োজনে অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যবস্থাপকদের এক্ষেত্রে নিয়োগ দেয়া যায়। এর ফলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা অত্যন্ত দক্ষ হয়।
(৯) আকর্ষণীয় বিনিয়োগ ক্ষেত্র: চিরন্তন অস্তিত্ব, সীমিত দায়, আইনানুগ নিয়ন্ত্রক, স্বল্প মূল্যে শেয়ার ক্রয়ের সুযোগ, শেয়ারের সহজ হস্তান্তর ইত্যাদি কারণে সকল ধরনের বিনিয়োগকারীর নিকটই এটা অত্যন্ত আকর্ষণীয় বিনিয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত।
(১০) ঋণের সুযোগ: স্বাধীন সত্তা, চিরন্তন অস্তিত্ব, জন আস্থা ইত্যাদি কারণে এরূপ ব্যবসায় সহজেই বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ সংগ্রহ করতে পারে।
লিমিটেড কোম্পানির / কোম্পানি সংগঠনের অসুবিধাসমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ
(১) জটিল গঠন প্রণালী: কোম্পানি একটি আইন সৃষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। এর গঠন বেশ সময় সাপেক্ষে, আনুষ্ঠানিকতাপূর্ণ ও ব্যয় বহুল। এ জন্যে অনেকেই এরূপ ব্যবসায় গঠনে নিরুৎসাহিত হয়।
(২) অদক্ষ পরিচালনা: এরূপ ব্যবসায়ের ব্যবস্থাপনা তার বেতনভূক্ত তৃতীয় পক্ষের ওপর ন্যস্ত থাকায় তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত উৎসাহে অনেক ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে অনেক সময়ই অদক্ষতা বিরাজ করে।
(৩) পরিচালকের স্বার্থ সিদ্ধি ঃ পরিচালকগণ শেয়ারহোল্ডারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার কারণে তারা অনেক সময় সম্মিলিতভাবে নিজেদের স্বার্থে কাজ করে। এতে ব্যবসায় ও শেয়ার মালিকগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
(৪) একচেটিয়া ব্যবসায় সৃষ্টি: বৃহদায়তন প্রকৃতিতে এ ধরনের ব্যবসায় গড়ে ওঠার কারণে অনেক সময় একচেটিয়া ব্যবসায় সৃষ্টির প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এতে ব্যবসায়ের স্বাভাবিক উন্নয়নের পথ বন্ধ হয় এবং সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৫. স্বজনপ্রীতি: কোম্পানির পরিচালকগণ কোম্পানির কর্মচারি নিয়োগ, পদোন্নতি, পদচ্যুতি ইত্যাদি ব্যাপারে অনেক সময় যোগ্যতার চেয়ে অযোগ্যতা বা স্বজনপ্রীতির উপরই বেশি গুরুত্ব দেয়।
(৬) পরিচালনা ব্যয়ের আধিক্য: এ ব্যবসায়ে বিভিন্ন সভা অনুষ্ঠান, অনুষ্ঠানাদি পালন, দলিল ও খাতাপত্র সংরক্ষণ, হিসাব নিরীক্ষা, শেয়ার ও ঋণ ইস্যু ইত্যাদি। বিভিন্ন কাজে যথেষ্ট উপরি খরচ হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পায়।
(৭) কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা: কোম্পানি সংগঠন গণতান্ত্রিক নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত হলেও বাস্তবে এর মূল ক্ষমতা কয়েক ব্যক্তির হাতেই সীমাবন্ধ থাকে। ফলে পরিচালকদের স্বার্থের কাছে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়।
(৮) সীমিত কার্যক্ষেত্র: এ কোম্পানি স্মারকলিপিতে উল্লেখ নেই এমন কোন কাজ সম্পাদন করতে পারে না। ফলে এর কর্মপরিধি নিদিষ্ট গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।
(৯) সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব: এ সংগঠনে ব্যবসায় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বহু আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয় বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটে।
(১০) গোপনীয়তার অভাব: আইন অনুযায়ী এ সংগঠনের হিসাব পত্র ও নিরীক্ষা রিপোর্ট, বার্ষিক প্রতিবেদনসহ বহু দলিলপত্র ও বিবরণ শেয়ার হোল্ডার, কোম্পানির নিবন্ধককে জনসমক্ষে পেশ করতে হয়। এতে ব্যবসায়ের গোপনীয়তা হ্রাস পায়।
লিমিটেড কোম্পানি বন্ধ করার নিয়মঃ
যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানি তার কাজকর্ম গুটিয়ে ফেলে, দায়-দেনার নিষ্পত্তি করে, তাকে কোম্পানির অবসায়ন বা বিলোপসাধন বলে। বাংলাদেশে ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ২৩৪(১) ধারায় কোম্পানীর বিলোপসাধন সম্পর্কে বলা হয়েছে। রাষ্ট্র ও আইনভেদে এর বিভিন্নতা থাকলেও মোটামুটি বিলোপের ধরনগুলো এরকম:
আদালতের নির্দেশে বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন:
কোম্পানি যদি বিশেষ প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে আদালত কর্তৃক তার অবসায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে।
বিধিবদ্ধ রিপোর্ট দাখিল করার বিষয়ে বা বিধিবদ্ধ সভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে বরখেলাপ হয়ে থাকে।
নিবন্ধন করার ১ বৎসরের মধ্যে যদি কোম্পানি কারবার আরম্ভ না করে বা ১ বৎসর যাবৎ কারবার বন্ধ রাখে।
স্বেচ্ছায় বিলোপসাধন:
সদস্যদের স্বেচ্ছায় বিলোপসাধন
পাওনাদার কর্তৃক স্বেচ্ছায় বিলোপসাধন
আদালতের তত্ত্বাবধানে স্বেচ্ছায় বিলোপসাধন।
লেখক: এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম,
আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
কোম্পানি নিবন্ধন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন www.lawfornations.com এর সাথেই থাকুন। যোগাযোগঃ- lawfornations.abm@gmail.com, মোবাইল: 01842459590-01711459590